শনিবার, ১৪ মে, ২০১১

টকশোতে কথা বলার মতোজ্ঞান আমার নেই - সুবীর নন্দী

আমাদের দেশের শুদ্ধ সঙ্গীত চর্চায় সময়ের সাথে আধুনিক থেকেছেন সবসময় সুবীর নন্দী। টক শো’তে যাওয়া নিয়ে তার ভীষন এলার্জি। চাকরীতে রিটায়ার্ডের পর এখন সারদিন তার গান নিয়েই কাটে।  সাম্প্রতিক গানের ভাবনা ও কাজ নিয়েই বিনোদন প্রতিদিনের মুখোমুখি হয়েছেন বরেণ্য এই কণ্ঠশিল্পী।
সাক্ষাত্কার নিয়েছেন
 অপলা প্রিয়দর্শিনী
প্রথমে শুনতে চাই আপনাকে কোন টকশোতে দেখা যায়না কেন?
আমি এত কথা বলতে পারিনা। টকশোতে কথা বলার মতো জ্ঞান আমার নেই। যে অনবরত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলবো। আমি গানের মানুষ এত কথা যদি বলি গান করবো কখন? তবে আমি সবার এই জ্ঞানগর্ভ কথা শুনতে ভালবাসি। প্রচুর টিভি শো দেখি। কয়েক মাস হলো আমি রিটায়ার্ড হয়েছি, এখন আমার অফুরন্ত অবসর। সারাদিন টিভি শো দেখি। আর এখন গানের চেয়ে বেশী তো টকশোতেই শিল্পীরা কথা বলেন দর্শক হিসেবে দেখতে ভালই লাগে।
রবীন্দ্রনাথের সার্ধশত জন্মবার্ষিকীতেও আপনাকে দেখা যায়নি, অনেক আধুনিক শিল্পীরাই রবীন্দ্রগান গেয়েছেন কিংবা কথা বলেছেন? তবে কি ইচ্ছে করেই আপনি দূরে ছিলেন?
না, তা হবে কেন? আসলে আমি অতি সম্প্রতি চীন সফরে গিয়েছিলাম। একেবারেই ব্যক্তিগত সফর। সেখানে আমার ছোট ভাই ইউএনডিপি বড় কর্মকর্তা। এই সময়টাতে আমি দেশের বাইরে থাকায় হয়তো গাওয়া হয়নি। তবে এক হিসেবে ভালই হয়েছে। আমরা বাঙালী সবকিছুতেই অতিরঞ্জিত না করলে মজা পাইনা। এবারেও এমনটাই দেখলাম। পুরো টিভি পর্দাকে যে যেভাবে পেরেছে রাবীন্দ্রিক করার চেষ্টা বা অপচেষ্টা করেছে। আমাকে খন্দকার নুরুল আলম ফোন করে বললেন,‘ কিরে তোকে তো দেখলাম না। বাকি সবাইতো গান করলো বা অনুষ্ঠানে হাজির হলো।’ তবে আমি প্রায় সবকটি অনুষ্ঠানই দেখার চেষ্টা করেছি। ভালই লেগেছে।
দুই বাংলার যৌথ আয়োজন হয়েছে, ওপার বাংলার অনেক শিল্পীও এসেছেন, কোন অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন?
স্বাগতালক্ষী শো দেখতে গিয়েছিলাম। যদিও আমার এই মেয়েটার কণ্ঠ বা গায়কী ভাল লাগেনি। কারণ কণ্ঠে কোমল বিষয়টা ওর ভেতর কম। যা রবীন্দ্রগানে বেশী জরুরী। আমি রবীন্দ্র গবেষক নই তবে অনুরাগী হিসেবেই আমার ইন্দ্রানী বা রেজওয়ানার গান যেভাবে টানে ওর গান সেভাবে টানেনি। দুই বাংলার আয়োজন বলতে এটুকু বলবো একটা ব্যপকতা ছিল। যা চোখে পড়ার মতো। এখন সেখানে ভাল কিছুও যেমন চোখে পড়েছে, অনেক অসঙ্গতিও চোখে পড়েছে। মন্দ গুলো নাইবা বলি। কারো মনে কষ্ট দিয়ে কী লাভ?
এবারে আপনার গানের খবর বলুন?
এক তরুন কম্পোজারের সুরে একটা সলো অ্যালবাম করছি। নামটা এখনই বলতে চাইনা। এটা আমি ইচ্ছে করেই করছি। নিজের গানে ভেরিয়েশন আনবার জন্য। আর ওর সুরও আমার ভাল লাগে দীর্ঘদিন ধরে। আশা করি আগামী মাস নাগাদ অ্যালবামটি শেষ করতে পারবো।
আমার জানা মতে আপনি নজরুলের গান গেয়েছেন বেশ কিছু, মঞ্চেও গেয়ে থাকেন। সামনে নজরুল জয়ন্তীতে কোন পরিকল্পনা আছে কি?
হ্যা আছে। নজরুলের গান গাইবো। এ নিয়ে আমি সুধীন দা’র সাথে বসারও পরিকল্পনা নিয়েছি। দাদার কাছ থেকে গানগুলি ঠিক করে তবেই গাইবো।
আপনি নিজেও অনেক সুর করেছেন, কম্পোজিশনের দিকে আগ্রহ আছে কি?
নাহ, একবারেই নেই। আমি এখন শুধু গান গেয়ে যেতে চাই। এখন চাকরী-বাকরি নেই। অখন্ড অবসর। তাই গানের রেয়াজ করি। আর প্রচুর গান শুনি। হিন্দী, ঊর্দু সবধরনের গান। খেয়াল শুনি। আর নিজেকে ভাঙতে থাকি। কবে আরো একটু ভাল করে গাইতে পারবো! আর তাই সুর বা কম্পোজিশনে মাথা ঘামাতে চাইনা। কিছু সুর করা আছে। কাজ করবো যদি ইচ্ছে হয়। তবে এখন গাইবার ইচ্ছেটাই বেশী। অনেক ভাল গান গাইবার ইচ্ছে। যে ক’দিন বেঁচে আছি আরো আরো ভাল গান গাইতে চাই। আর কম্পোজিশন সেখানোর জন্য অনেকেই বলে। কিন্তু কম্পোজিশন একটা নেশার মতো এটা করতে গেলে আমি ঐ গানের নোটেশন ভুল খুঁজতে থাকবো। গানটা আর হবে না।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন