মঙ্গলবার, ২৩ আগস্ট, ২০১১

আদালতে গেলে শোনা যায় আওয়ামী লীগ বেঞ্চ, বিএনপি বেঞ্চ, জামায়াত বেঞ্চ। এগুলো কি শুনতে ভালো লাগে! এভাবেই আমাদের বিচার বিভাগ চলছে : ব্যারিস্টার রফিক-উল হক

সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিক-উল হক। উচ্চআদালতে চলমান অস্থির অবস্থা, বিচার বিভাগের ওপর রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ, দলীয় বিবেচনায় বিচার বিভাগে নিয়োগসহ আদালত প্রাঙ্গণের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন সাপ্তাহিক বুধবার-এর সঙ্গে। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন – আহম্মদ ফয়েজ
বুধবার : মঙ্গলবার উচ্চতর আদালতে বিএনপি সমর্থিত আইনজীবীদের নেতৃত্বে একটি অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে মামলা ও গ্রেফতারের ঘটনা ঘটেছে এবং আদালত প্রাঙ্গণ অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে। উচ্চতর আদালতে এ ধরনের ঘটনার পেছনে কি কারণ থাকতে পারে বলে আপনি মনে করেন?
ব্যারিস্টার রফিক-উল হক : আদালতে ঘটে যাওয়া এই ঘটনার প্রধান কারণ, আমার কাছে মনে হয়েছে, আইনজীবী এবং আদালত দুইয়েরই ধৈর্যের অভাব। তাদের ধৈর্য না থাকায় এই ছোটখাটো বিষয় থেকে এমন ঘটনার জন্ম হচ্ছে। এখানে একটা বিষয় হচ্ছে আইনজীবীদের মধ্যে যেমন দলীয় রাজনীতি রয়েছে, তেমনি আমার ধারণা, কিছু আদালতও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হচ্ছে। আদালত যদি নিরপেক্ষ না থাকে, তাহলে আইনজীবীরাও নিরপেক্ষ এবং শান্ত থাকতে পারেন না। আইনজীবীরা উত্তেজিত হয়ে যান। এই পরিস্থিতির জন্য আইনজীবীরা যেমন দায়ী, তেমনি কিছু আদালতও দায়ী। আদালত যদি ইন্ধন না যোগাত তাহলে আইনজীবীরাও এরকম আচরণ করতে পারত না। ওই ঘটনায় আদালত যেসব মন্তব্য করেছে, সেগুলো ইস্যুর বাইরে ছিল। সেদিন আমিনী ইস্যু ছিল কিন্তু অন্য কেউ তো ইস্যু ছিল না। যারা ইস্যু নয়, তাদের সম্পর্কে অপ্রয়োজনীয় মন্তব্য করার কি দরকার! এই মন্তব্য যারা মেনে নিতে পারেননি, তাদের ধৈর্য ধারণ করা উচিত ছিল, কিন্তু তারা উত্তেজিত হয়ে গেছেন। আদালত যদি মন্তব্যের পর কোনো অর্ডার দিত তাহলে ওই আইনজীবীরা আপিল বিভাগে যেতে পারতেন। আইনি প্রক্রিয়ায় থেকেই এগুনো সম্ভব হতো, কিন্তু সেটা না করে, আদালতে মারমুখী হওয়াটা তো উচিত হয়নি। এ ধরনের ঘটনা কারো জন্যই সুখকর নয়। বিচারকদের জন্যও নয়, আইনজীবীদের জন্যও নয়। যারা সংশ্লিষ্ট নয় তাদের সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করা আদালতের জন্য উচিত নয়। আর যে কোনো ঘটনাতেই আইনি প্রক্রিয়ায় এগুনোই আইনজীবীদের কাজ হওয়া উচিত। আমি ব্যক্তিগতভাবে এসব ঘটনা খুবই অপছন্দ করি। আদালতে মারামারি, যুদ্ধংদেহীভাব কখনোই ভালো নয়। এগুলো কারো কাছেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। গণতন্ত্রের জন্য লড়াই হতে পারে, মানবিকতার জন্য লড়াই হতে পারে। কিন্তু যা ঘটল তা কেন হবে!
বুধবার : ২০০৬ সালে তৎকালীন বিরোধী দল আওয়ামী লীগ সমর্থিত আইনজীবীরা প্রধান বিচারপতির কার্যালয় ভাংচুর করেছে। এছাড়া বিভিন্ন সময় আদালত প্রাঙ্গণে সমাবেশ ঘটিয়ে আদালতকে হুমকি প্রদানের ঘটনাসহ এমন বেশ কিছু ঘটনা ঘটে। ২০০৬ সালের ঘটনায় জড়িতরা পরবর্তীতে এই আদালতেরই বিচারকও হয়েছেন এবং রাষ্ট্রের আইন কর্মকর্তার পদেও নিয়োগ পেয়েছেন। এই প্রবণতাকে আপনি কিভাবে ব্যাখ্যা করবেন?
রফিক-উল হক : সেই সময় যারা গোলমালের সঙ্গে জড়িত ছিলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে তাদের কাউকেই চিনি না। যারা এখন বিচারক হয়েছেন, কি ছিলেন তারা, কোন পার্টি করতেন, এসবের কিছুই আমি জানি না। তবে এই প্রবণতাটা যদি অব্যাহত থাকে তাহলে এর চাইতে খারাপ কিছুই হতে পারে না। এটা ভয়ঙ্কর এক প্রবণতা। আমি খুবই সচেতনভাবে এই বিষয়টিকে অপছন্দ করি। এই ধরনের ঘটনার সঙ্গে কখনোই একমত পোষণ করা যায় না। একজন বিচারক নিয়েগের ক্ষেত্রে অবশ্যই এই আস্থাটা থাকা জরুরি, যার ফলে একজন বিচারকের রায় মেনে নিতে কোনো মানুষের দ্বিধা কাজ করবে না। কিন্তু যা হয়েছে এমন ঘটনা আইনি কাঠামো, স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা এবং গণতন্ত্রকে ক্ষুণ্ণ করবে। এসব করা হলেই এই সিস্টেমগুলো ভেঙে পড়বে। এভাবে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা যায় না, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হতে পারে না। বিচারকরা আইনানুগতভাবে যা ইচ্ছে তাই করবেন, আইনজীবীরাও আইনানুগভাবে যা ইচ্ছে তাই করবেন, কিন্তু কিসের জন্য এসব করা হবে এমন কোনো লক্ষ্য স্থির না থাকলে সব কিছুতেই ঝামেলা হয়ে যাবে।
বুধবার : দলীয় বিবেচনায় ও জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘনের মাধ্যমে বিচারকসহ বিভিন্ন পদে নিয়োগের নেতিবাচক প্রভাব কি হতে পারে বলে আপনার কাছে মনে হয়?
রফিক-উল হক : যেসব ঘটনা এখন ঘটছে, এগুলোই তো নেতিবাচক প্রভাব। দলীয় নিয়োগের ফলেই তো এসব অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে। বিচারক যদি নিরপেক্ষ হতো তাহলে নিশ্চই এই ধরনের ঘটনা ঘটতো না। আমার সবচেয়ে খারাপ লাগে, যখন দেখি, কিছু আইনজীবী সরাসরি রাজনীতি তো করেই, কিছু আইনজীবী আছে রাজনীতি করেন না কিন্তু রাজনীতির জন্য পরিচালিত হন গোপনে। এখন বিষয় হচ্ছে স্বাধীন বিচার ব্যবস্থাকে প্রতিষ্ঠিত করা তো শুধু আইনজীবীদের দায়িত্ব নয়, এটা বিচারকদেরও দায়িত্ব। দেখা যাচ্ছে জামিনের জন্য যাওয়ার পর, আদালত যে আগুনে পানি ঢালবে সেখানে তেল ঢালছে। বিচারকরা এটাকে অনেক বড় ক্রেডিট হিসেবে দেখছেন। অন্য যায়গায় বাহ বাহ পাবেন। কিন্তু এটাতো ভালো নয়। বিচারক এবং আইনজীবী দু’জনই বিচার ব্যবস্থার অংশ। আইনের সুশাসন প্রতিষ্ঠার স্বার্থে এখানে দু’জনেরই কর্তব্য রয়েছে। এর মধ্যে একে অপরের সহযোগিতায় না এগুলে চলবে কি করে! আমি আইনজীবী যদি ভুল করি আপনি বিচারক সে ভুলে আগুন দেবেন না। এজন্যই রাজনৈতিক নিয়োগের মাধ্যমে এবং রাজনৈতিক পক্ষপাতদুষ্ট বিচারককে নিয়োগ দেওয়া ঠিক না। এখানে এমন লোক নেওয়া দরকার, যারা কখনোই দলীয় রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত নন। এই ধরনের লোক পাওয়া অবশ্য কঠিন, কিন্তু সর্বোচ্চ চেষ্টাটুকু তো থাকা লাগবে। খারাপের মধ্যে হলেও ভালো খুঁজে বের করতে হবে।
বুধবার : প্রচলিত ধরনের নিয়োগের পেছনে রাজনৈতিক অভিপ্রায় কতটুকু বলে আপনি মনে করেন?
রফিক-উল হক : দেখা যায় সরকার নিজেদের সুবিধার কথা চিন্তা করে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দিচ্ছে। এবারো তাই ঘটলো, জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করে একজনকে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দেওয়া হলো। যে বিচারকের জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করা হলো তিনি ব্রিগেডিয়ার (অবঃ) হান্নান শাহের ভাই। তাকে নিয়োগ দিলে আবার কি হয় এই চিন্তা থেকেই তাকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এখন বলছে অন্য কথা। সে নাকি অসুস্থ। আরে কিসের অসুস্থ? আমি তার চেয়ে অনেক বেশি অসুস্থ। আমি কাজ করছি না? এখন এসব অজুহাত দিয়ে দেশটার বারোটা বাজিয়ে তো কোনো লাভ নেই। আসলে এই বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্রে দলীয় রাজনৈতিক অভিপ্রায় কাজ করছে। এটা খুব খারাপ প্রবণতা। বিচারপতি যিনি হবেন সেখানে কার ছেলে, কার ভাই, কার আত্মীয় এসব বাদ দিয়ে কোয়ালিটি দেখতে হবে। তিনি মানুষ হিসেবে সৎ কিনা, কাজের জন্য যোগ্য কিনা, এসব বিষয় অগ্রাধিকার দিতে হবে। তা না করে যার যেভাবে সুবিধা হচ্ছে সেভাবে যদি করে সেটা কিন্তু ঠিক নয়।
বুধবার : রাষ্ট্রের তিনটি স্তম্ভের একটি হচ্ছে বিচার বিভাগ। এই বিভাগের বর্তমান অবস্থাকে আপনি কিভাবে দেখছেন?
রফিক-উল হক : আমরা তো বলেই চলেছি স্বাধীন বিচার বিভাগ চাই। সরকারও জানে, এই নিয়ে কত কি হলো। ২০০৭ সালের নভেম্বর থেকে স্বাধীন বিচার বিভাগ করা হলো। তখন ঢোল পিটিয়ে এসব প্রচারও করেছে। কিন্তু এগুলো তো মুখের কথা। আসলে স্বাধীন বিচার বিভাগ নির্ভর করে যিনি বিচারক তিনি কতটুকু নিজের স্বাধীনতা নিয়ে কাজ করতে পারেন তার ওপর। উচ্চ আদালতের কোনো বিচারকের তো চাকরি যাওয়ার সুযোগ নেই। তাহলে কেন তিনি স্বাধীন হবেন না। পিছনের লোকগুলোকে খুশি করার জন্যই তিনি স্বাধীন থাকেন না। আরেকটা হচ্ছে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হওয়ারও একটা লোভ কাজ করতে পারে। যে বিচারক শেষ অবসরে থাকবেন, তিনিই হবেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা। এই বিষয়টা বিচার বিভাগের জন্য যে কত বড় ক্ষতিকর সেটা বোঝাটাও বেশ কঠিন। এই ব্যবস্থাটি না থাকলে ওয়ান-ইলেভেনও হতো না।
বুধবার : সাম্প্রতিককালে আদালতের কিছু রায় নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্ক শুরু হয়েছে। এই বিতর্কের কারণ কি? আদালতের এই রায়গুলো কতটা যথাযথ ছিল?
রফিক-উল হক : রাজনৈতিক বিতর্কের পিছনে আসলে যৌক্তিক কোনো কারণ নেই। যেসব রায় নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্ক চলছে, সেখানে দেখা যাচ্ছে ওইসব রায় ভালো করে রাজনৈতিক দলগুলো দেখেইনি। তারা রাজনৈতিক কারণেই রাজনৈতিক বিতর্কের দিকে যাচ্ছে। আর রায়ের যৌক্তিকতা কিংবা যুক্তিহীনতার বিষয়ে কিছু বলার নেই সেভাবে। আদালতের তো যেটা মন চাচ্ছে সেটাতেই একটা অর্ডার দিয়ে বসছে। এগুলো এক ধরনের অপ্রয়োজনীয় কাজ। রায় যখন হয়, বিচারক যখন কথা বলেন, সেগুলোই আইন। কিন্তু এই আইন চিরকাল থাকে না। এগুলো সময়ের প্রেক্ষাপটে, রাজনীতির প্রেক্ষাপটে এবং বৈশ্বিক অবস্থার ওপর নির্ভর করে পাল্টে যায়। আমাদের বিচারকরা এখন আইনের বিচার না করে দেখে মানুষটা কে, সময়টা কি। এসব কারণে সব বিষয় খুব বেশি সাংঘর্ষিক হয়ে যায়। এগুলো মেনে নেওয়া যায় না। এসবের মাধ্যমে দেশটাকে একটা অস্থির পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। আমরা এমনটি মোটেও আশা করিনি। সুপ্রিমকোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশন এর বিরোধিতা করছে। আরো অনেকেই করেছে। আমি নিজেও এই ধরনের কর্মকান্ডের বিরোধী।
বুধবার : অনেক আইনজীবী অভিযোগ করেন, আদালতের এই বেঞ্চ এই দলের, ওই বেঞ্চ ওই দলের। এই অভিযোগগুলো কেন আসে?
রফিক-উল হক : এই প্রবণতাটা গত কয়েক বছর ধরে চলে আসছে। আশ্চর্যজনক বিষয় হচ্ছে বেঞ্চগুলো অঘোষিতভাবেই আলাদা হয়ে গেছে। আদালতে গেলে শোনা যায় আওয়ামী লীগ বেঞ্চ, বিএনপি বেঞ্চ, জামায়াত বেঞ্চ। এগুলো কি শুনতে ভালো লাগে! এভাবেই আমাদের বিচার বিভাগ চলছে। এর চাইতে দুঃখের আর কিছু নেই। এভাবে তো আর চলতে পারে না, একদিন না একদিন এ অবস্থার উন্নতি হবে। মানুষ আর কত নিচে নামবে! নামতে নামতে আমরা অনেক নিচে নেমেছি, এবার ওঠা ছাড়া উপায় নেই।
বুধবার : সম্প্রতি আদালতের একটি সংক্ষিপ্ত রায়ের ওপর ভিত্তি করে সরকার তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করেছে। আদালতের সংক্ষিপ্ত এই রায়ে দুটি দিক থাকলেও সরকার গ্রহণ করেছে একটি। এর কারণ কি হতে পারে, আর আদালতের রায়টি এখনো পূর্ণাঙ্গ না আসারই বা কি কারণ থাকতে পারে?
রফিক-উল হক : এই রায়টি না দেখেই সরকার একটা সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে। আদালতের যে সংক্ষিপ্ত রায় সেখানে বলা আছে পূর্ণাঙ্গ রায় ফলো করার জন্য। কিন্তু এখন যে কাজটি হয়ে গেল সেটি কিসের ওপর ফলো করে হয়েছে। ওই সংক্ষিপ্ত রায়টিও তো পুরোপুরি মানা হয়নি। এই কাজটি প্রধানমন্ত্রীর করা উচিত হয়নি। তার কাছ থেকে আমরা এসব আশা করি না। তিনি তো ‘বঙ্গবন্ধু’ কন্যা। তার রক্তে রাজনীতি। তিনি কি করে এমন একটা কাজ করে বসলেন। যেখানে তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা ছাড়া কোনোভাবেই চলা সম্ভব না, সেখানে তিনি পুরো ব্যবস্থাটাকেই আদালতের দোহাই দিয়ে বাতিল করে দিলেন।
আদালত এমন একটি স্পর্শকাতর বিষয়ে যে সংক্ষিপ্ত রায় দিয়ে বসে আছে এটাও ঠিক হচ্ছে না। এই রায়টি কেন এখনো পূর্ণাঙ্গভাবে এলো না – তা আমার কাছে বোধগম্য নয়।
বুধবার : বিচার বিভাগের ওপর রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের সুদূরপ্রসারী প্রতিক্রিয়া কি হতে পারে?
রফিক-উল হক : বিচার বিভাগের ওপর রাজনৈতি প্রভাব যদি অব্যাহত থাকে তাহলে বিচার বিভাগ চূড়ান্তভাবে ভেঙে পড়বে। বিচার বিভাগ রাষ্ট্রের একটা অঙ্গ, এই অঙ্গটি হচ্ছে মাথা। মাথাই যদি ভেঙে পড়ে তাহলে আর কিছুই রইলো না। এটা নিয়ে যেন কারোরই কোনো মাথা ব্যথা নেই। কিন্তু বিষয় হচ্ছে এই দেশটাকে তো আমাদেরই রক্ষা করতে হবে। কেউ এসে তো এই কাজ করে দিয়ে যাবে না।
বুধবার : বিসমিল্লাহ, রাষ্ট্রধর্ম, ধর্মীয় রাজনৈতিক দল রেখেই সরকার সংবিধান সংশোধন চূড়ান্ত করেছে। এই বিষয়টিকে আপনি কিভাবে দেখেন?
রফিক-উল হক : এখানে কথা হচ্ছে রাষ্ট্রের কোনো ধর্ম হয়? রাষ্ট্র কি নামাজ পড়ে, রোজা করে, নাকি পূজা করে? রাষ্ট্রের ধর্ম হবে কেন? রাষ্ট্রের কোনো ধর্ম হয় না। ধর্ম হয় মানুষের। এটা এরশাদের আমলে হয়েছে। এরশাদ রাজনৈতিক সুবিধা হাসিলের জন্যই এ কাজ করেছিলেন। তিনি মনে করেছিলেন, আকর্ষণীয় কিছু করতে হবে, সেজন্যই হয়তো করেছেন। সে সময় কি করেছিল এরশাদ তা কেউ চিন্তাই করতে পারবে না। আমি নিজে ছুটে গিয়েছিলাম তার কাছে। তাকে বললাম রাষ্ট্রের ধর্ম কিভাবে হয়? এখানে তো মুসলমান ছাড়াও অন্যান্য জাতি-ধর্মের লোকেরা বসবাস করে। তখন তিনি এর সঙ্গে যোগ করেছেন তবে অন্যান্য ধর্মের লোকেরাও নিজ নিজ ধর্ম পালন করবে। এবারো শেখ হাসিনা সেই অবস্থা থেকে বের হয়ে আসতে পারেননি।
বুধবার : আপনাকে ধন্যবাদ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন